“ বল, ভাল এবং মন্দ এক নয় যদিও প্রাচুর্য তোমাকে চমৎকৃত করে, সুতরাং হে জ্ঞানী সমাজ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর- যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। সূরা : মায়িদাহ ঃ আয়াত : ১০০
১. হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার রাস্তার ধারে একটি খেজুর পেলেন। তখন তিনি বললেন, এটি যদি সদকার মাল হবার আশংকা না হত তাহলে অবশ্যই আমি এটাকে খেয়ে নিতাম। ( বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
২. হযরত নাওয়াস ইবনে সামআন (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, পুণ্য ও সততা সচ্চরিত্রেরই অপর নাম। অপর দিকে গোনাহ হল যা তোমার অন্তরে সন্দেহের অবতারণা করে এবং লোকজন তা জেনে ফেলুক তা তোমার কাছে অপছন্দনীয়। (মুসলিশ শরীফ)
৩. হযরত ওয়ারিসা ইবনে মা’বাদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এলাম। তিনি ইরশাদ কররেন, তুমি কি ভাল ও মন্দ কাজের ব্যাপারে কিছু করতে এসেছ ? আমি বললাম হ্যাঁ, তিনি ইরশাদ করলেন, তোমার অন্তরকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করো। ভাল ও সৎ স্বভাব হলো, যার উপর নফ্স তৃপ্ত থাকে এবং হৃদয় প্রশান্ত লাভ করে থাকে। আর গোনাহ হলো যা মনে খটকা ও সংশয়ের সৃষ্টি করে এবং অন্তরে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার উদ্রেক করে। যদিও লোকজন তোমাকে ফাতওয়া দিক বা তোমাকে ফাতওয়া প্রশ্ন করুক।
৪. হযরত হাসান ইবনে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে আমি একথাটি স্মৃতিপটে সংরক্ষণ করেছি। যে জিনিষ তোমাকে সন্দেহে পতিত করে তা ছেড়ে দাও এবং যা কোনরূপ সন্দেহে পতিত করে না তা গ্রহণ কর। (তিরমীযি শরীফ)
৫. হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর একটি গোলাম ছিল। সে রোজ তাকে কামাই করে এনে দিত। হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু তার কামাই থেকে খেতেন। একদিন সে কিছু একটা নিয়ে এল। হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু তার হতে কিছু খেলেন। গোলামটি তাকে বলল, আপনি জানেন এটা কি ছিল ? হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন ঃ এটা কি ছিলো ? গোলামটি বলল আমি জাহিলিয়াত যুগে কোন এক লোকের হাত গুণে ছিলাম। আর গণনাও আমি তেমন জানতাম না। আমি তাকে পুরোপুরি ধোকা দিয়েছিলাম। এখন তারই সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। সে আমাকে এ জিনিষটা দিয়েছিল যা আপনি খেলেন। একথা শুনে হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু মুখে হাত প্রবেশ করিয়ে দিলেন এবং পেটে যা ছিল সব বমি করে ফেলে দিলেন। (বোখারী শরীফ)
৬. হযরত নাফি রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রথম দিকে হিজরতকারীদের জন্য বছরে চার হাজার দিরহাম ভাতা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। কিন্তুু তার নিজ পুত্রের জন্য নির্ধারণ করলেন তিন হাজার পাঁচ শত দিরহাম। তাকে বলা হল, আপনার পুত্রও তো মুহাজিরদের অন্তর্গত। তাহলে তার জন্য কম ভাতা নির্ধারণ করলেন কেন? তিনি বললেন, তার সঙ্গে তো তার পিতাও হিজরত করেছে। অর্থাৎ তিনি বলতে চাচ্ছেন তার অবস্থা তো তাদের ন্যায় নয়। যারা একাকী হিজরত করেছে। (বোখারী শরীফ)
৭. হযরত আতিয়্যা ইবনে ওরওয়াহ সা’দী সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, বান্দা ততসময় পর্যন্ত মুত্তাকীদের মর্যাদায় উন্নীত হতে পারে না। যত সময় পর্যন্ত না সে এমন সব জিনিষ ত্যাগ করবে যাতে কোন দোষ রয়েছে। যাতে করে সে ঐ সব জিনিষ হতে আত্মরক্ষা করতে পারে। যাতে কোন না কোন দোষ রয়েছে। (তিরমিযী শরীফ)
Leave a Reply